বাংলা ছন্দ:
বাংলা ছন্দ তিন প্রকার:
ক.অক্ষরবৃত্ত
খ.বর্নবৃত্ত
গ.স্বরবৃত্ত
ছন্দ – অন্য নাম – বৈশিষ্ঠ্য
অক্ষরবৃত্ত – কলামাত্রিক বা মিশ্রকলামাত্রিক বা যৌগিক ছন্দ – মূল পর্ব ৮ বা ১০ মাত্রার হয়।
ইহাতে সংযুক্ত বা অসংযুক্ত অক্ষর সমান ধরা হয়।
কেষ্টা=কে (১)+ষ্টা (১)=২ অক্ষর
বর্ণবৃত্ত – কলাবৃত্ত বা মাত্রাবৃত্ত বা ধ্বনিপ্রধান ছন্দ – মূল পর্ব সাধারণত ৬ মাত্রার হয়।
ইহাতে সংযুক্ত অক্ষরকে দুই বর্ণ ধরা হয়।
কেষ্টা=কে(১)+ষ্টা(১+১)=৩ অক্ষর
স্বরবৃত্ত- দলবৃত্ত বা লৌকিক বা ছড়ার ছন্দ – মূল পর্ব মাত্রার সংখ্যা ৪।
ইহাতে কেবল স্বর গণনা করা হয়।
যথা-বাঘের=বা(১)+ঘের(১)=২ স্বর
বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর
১.বাংলা ছন্দ কত রকমের? (২৫ তম বিসিএস)
-তিন
২.যে ছন্দের মূল পর্বের মাত্রা সংখ্যা চার, তাকে বলা হয় – (১৭ তম বিসিএস)
-স্বরবৃত্ত
৩.লৌকিক ছন্দ কাকে বলে? (এলজিইডিতেত সহকারী প্রকৌশলী:০৫)
-স্বরবৃত্তকে
৪.ছেলে-ভুলানো ছড়াসহ সাধারণত কোন ছন্দে লেখা হয়? (তথ্য মন্ত্রণালয়ে অধীন প্রোকৌশলী:০৭)
-স্বরবৃত্ত
৫.বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদী এল বান শিব ঠাকুরের বিয়ে হলো তিন কন্যে দান – কোন ছন্দে রচিত হয়েছে?
-স্বরবৃত্ত
বিভিন্ন ছন্দের রূপ
পয়ার – প্রত্যেক চরণে ১৪ অক্ষর থাকে।
৮ ও ১৪ অক্ষরের পর যতি থাকে।
অমিত্রাক্ষর ছন্দ – অন্য নাম – প্রবাহমান অক্ষরবৃত্ত ছন্দ।
কবিতার চরণের শেষে মিল থাকে না।
অমিত্রাক্ষর ছন্দ পয়ারেরই এক প্রকার ভেদ।
মাইকেল মধূসুদন দত্ত বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তন করেন।
মিত্রাক্ষর ছন্দ – কবিতার চরণের শেষে মিল থাকে।
অসম ছন্দ – ইহা মিত্রাক্ষর ছন্দ। কিন্তু প্রত্যেক চরণের অক্ষর সংখ্যা অসমান।
চরণের মধ্যে যতির স্থান ইচ্ছাধীন।
রবীন্দ্রনাথ বলাকায় এই ছন্দের প্রবর্তন করেন।
স্বরাক্ষরিক ছন্দ – প্রবর্তক: সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত।
বিপরীতার্থক শব্দঃ
যে শব্দ অন্য কোন শব্দের বিপরীত অর্থ প্রকাশ করে, তাকে বিপরীতার্থক শব্দ বলে।
যেমন—অর্থই অনর্থের মূল।
এখানে অনর্থ অর্থের বিপরীত অর্থ প্রকাশ করেছে। বিপরীত শব্দ ব্যবহারের ফলে ভাষা সুন্দর ও গতিশীল হয়।
নিচে বিপরীত শব্দের কতিপয় উদাহরণ দেওয়া হলোঃ
# উগ্র-সৌম্য (ডাক বিভাগের পোস্টাল অপারেটর ২০১৬, ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন স্কল/সমপর্যায়, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ১০, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ১০, প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ০৯)
# অর্বাচীন-প্রাচীন (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ২০১৬, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ২০১৫, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ০৭, রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক ১১, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক (ইছামতি)’ ১০, প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক (বেলী) ০৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক (শিউলী) ০৯)
# প্রাচী-প্রতীচী (৮ম বিজেএস (সহকারী জজ) ১৩)
# ‘নৈসর্গিক-কৃত্রিম (সাধারণ পুলের আওতায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার, উপসহকারী প্রকৌশলী, প্রশাসনিক কর্মর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ২০১৬)
# ঔদ্ধত্য-বিনয় (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক ১৩, ৮ম বেসরকারী প্রভাষক নিবন্ধন প্রত্যয়ন পরীক্ষ ১২, রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক ১১)
# ক্ষীয়মাণ-বর্ধমান (NSI সহকারী পরিচালক ২০১৫, ২৫তম বিসিএস, প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক (শাপলা))
# যে শব্দজোড় বিপরীতার্থক নয়: হৃষ্ট-পুষ্ট (৩৫তম বিসিএস)
# উত্তপ্ত শব্দের বিপরীতার্থক শব্দ: শীতল (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসহকারী প্রকোশীলী ২০১৬)
# আবির্ভাব এর বিপরীত শব্দ-তিরোভাব (১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন স্কুল/সমপর্যায় ২০১৬)
# ‘অলীক’ এর বিপরীত শব্দ-বাস্তব (১৩তম প্রভাষক নিবন্ধন পরীক্ষা কলেজ/সমপর্যায় ২০১৬)
# জঙ্গম-স্থাবর (২৪তম বিসিএস, তথ্য মন্ত্রণালয়ের (গণযোগাযোগ প্রশিক্ষণ) সহকারী পরিচালক ০১, প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ০৯)
# বিরক্ত-অনুরক্ত (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ২০১৫)
# গৃহী-সন্ন্যাসী (৩৩তম বিসিএস, খাদ্য অধিদপ্তরের উপ-খাদ্য পরিদর্শক ১২)
# চঞ্চল-অবিচল (খাদ্য অধিদপ্তরের উপ-খাদ্য পরিদর্শক’১২)
# ঐচ্ছিক-আবশ্যিক (পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার আপারেটর ’১১)
# মনীষা-নির্বোধ (পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার আপারেটর ’১১)
# প্রসন্ন-বিষণ্ন (প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক (পদ্মা) ’১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক (শাপলা) ০৯)
# অনাবিল-আবিল (অর্থ মন্ত্রনালয়ের অফিস সহকারী ১১)
# আকস্মিক-চিরন্তন (রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক ১১)
# ধীর-অধীর (অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী ২০১১)
# নিরাকার-সাকার (প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ২০১২)
# সঙ্কুচিত-প্রসারিত (চতুর্থ বিজেএস ২০০৯)
# শ্রীযুক্ত-শ্রীহীন (অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী ২০১১)
# হিত-অহিত (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনসার ও ভিডিপি অধি.সার্কেল অ্যাড.২০১০)
# নির্মল-পঙ্কিল (প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ২০১২)
# কুটিল-সরল (প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ২০১২)
# অমৃত-গরল(ATEO ২০০৯)
# উৎকর্ষ-অপকর্ষ (অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী ১১)
# হর্ষ-বিষাদ (পরিবার পরিকল্পনা অধি.২০১১)
# অতিকায়-ক্ষুদ্রকায় (তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন গণযোগাযোগ অধি. সহ. তথ্য অফিসার ২০১৩)
# ঝানু-অপটু (খাদ্য অধি. উপ-খাদ্য পরি.২০১২)
# সংশয়-প্রত্যয় (১১তম বিসিএস, পঞ্চম বিজেএস (সহকারী জজ)১০, সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা ২০১২)
# পাশ্চাত্য-প্রাচ্য (৯নবম শিক্ষক নিবন্ধন ১৩)
# তাপ-শৈত্য (১৫তম বিসিএস; দুর্নীতি দমন ব্যুরোর সহকারী পরিদর্শক ০৪)
# চিরন্তন-ক্ষণকালীন (প্রাক.প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক’১৩ সুরমা)
=============================
অশন – অনশন
প্রতিযোগী – সহযোগী
শ্বাস – প্রশ্বাস
সমক্ষ – পরোক্ষ
হর্ষ – বিষাদ
সন্ধি – বিগ্রহ
সার্থক – ব্যর্থ
সদাচার – কদাচার
সমতল – বন্ধুর
হ্রাস – বৃদ্ধি
অনুগ্রহ – নিগ্রহ
অনুলোম – প্রতিলোম
অনুজ – অগ্রজ
অপকার – উপকার
অমৃত – বিষ, গরল
অনুরক্ত – বিরক্ত
অনুরাগ – বিরাগ
অণু – বৃহৎ
অভিজ্ঞ – অনভিজ্ঞ
অন্ত্য – আদ্য
অর্থ – অনর্থ
অসীম – সসীম
অধম – উত্তম
অর্বাচীন – প্রাচীন
অবিরল – বিরল
অধমর্ণ – উত্তমর্ণ
অনুকূল – প্রতিকূল
আসক্ত – বিরক্ত
অর্জন – বর্জন
অর্পণ – গ্রহণ
অলীক – সত্য
অম্ল – মধুর
অগ্র – পশ্চাৎ
অতিকায় – ক্ষুদ্রকায়
আশু – বিলম্ব
আপত্তি – সম্মতি
আকর্ষণ – বিকর্ষণ
আবির্ভাব – তিরোভাব
আদ্য – অন্ত্য
অবনত – উন্নত
অগ্রগামী – পশ্চাৎগামী
আগমন – প্রত্যাগমন
আচার – অনাচার
আবিল – অনাবিল
আস্তিক – নাস্তিক
আঁঠি – শাঁস
ইহ – পরত্র
ঈষৎ – অধিক
উচ্চ – নীচ
উপরোধ – অনুরোধ
উক্ত – অনুক্ত
ঈদৃশ – তাদৃশ
উগ্র – সৌম্য
উৎকর্ষ – অপকর্ষ
উপসর্গ – অনুসর্গ
ঋজু – বক্র
আসামি – বাদী
আবদ্ধ – মুক্ত
উজান – ভাটি
উদ্ধত – বিনীত
ঐহিক – পারত্রিক
করাল – সৌম্য
একমত – দ্বিমত
কর্কশ – কোমল
ক্রোধ – প্রীতি
ক্ষীণ – পুষ্ট
ক্ষয়িষ্ণু – বর্ধিষ্ণু
ক্ষয় – বৃদ্ধি
ক্ষীয়মাণ – বর্ধমান
গরিষ্ঠ – লঘিষ্ঠ
গুপ্ত – ব্যপ্ত
খাতক – মহাজন
গ্রহীতা – দাতা
গৃহী – সন্ন্যাসী
চেতন – জড়
চোর – সাধু
গৌণ – মুখ্য
চয় – অপচয়
চড়াই – উৎরাই
ঘাত – প্রতিঘাত
গুরু – লঘু
জঙ্গম – স্থাবর
জড় – চেতন
তীব্র – লঘু
তামসিক – রাজসিক
তস্কর – সাধু
টাটকা – বাসি
ঝুনা – কাঁচা
জন্ম – মৃত্যু
তিরস্কার – পুরস্কার
দুঃখ – সুখ
দুর্বার – নির্বার
দূর – নিকট
ধূর্ত – সাধু
নীরস – সরস
নশ্বর – শাশ্বত
নিত্য – নৈমিত্তিক
নিরাকার – সাকার
ধবল – কৃষ্ণ
দুর্লভ – সুলভ
নিঃশ্বাস – প্রশ্বাস
নিরর্থক – সার্থক
নিরক্ষর – সাক্ষর
নিরত – বিরত
প্রাচ্য – প্রতীচ্য
বন্ধুর – মসৃণ
পরকীয় – স্বকীয়
বিনীত – গর্বিত
অল্প – বেশি
আয় – ব্যয়
কাঁচা – পাকা
চঞ্চল – স্থির
বাঁচা – মরা
তরুণ – বৃদ্ধ
সত্য – মিথ্যা
স্বাধীন – পরাধীন
নতুন – পুরাতন
ইচ্ছা – অনিচ্ছা
পুরুষ – নারী
শত্রু – মিত্র
দেনা – পাওনা
সুশ্রী – বিশ্রী
নরম – কঠিন
হার – জিত
*****************************
বাগধারা শব্দের অর্থ কথা বলার "বিশেষ ঢং বা রীতি " । এটা এক ধরনের গভীর ভাব ও অর্থবোধক শব্দ বা শব্দগুচ্ছ । বাগধারা বা বাগ্বিধি কোনো শব্দ বা শব্দগুচ্ছের বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে। সাধারণ অর্থের বাইরে যা বিশিষ্ট অর্থ প্রকাশকরে থাকে তাঁকে বাগ্বিধি বা বাগ্ধারা বলে । যেমন- অরণ্যে রোদন- অর্থ : নিষ্ফল আবেদন = কৃপণের কাছে চাঁদ চাওয়া অরণ্যে রোদন মাত্র।
প্রবাদ-প্রবচন
পৃথিবীর সকল ভাষাতেই প্রবাদ বা প্রবচনের প্রচলন আছে। বাংলা ভাষাতেও প্রবচনের প্রয়োগ দেখা যায়। প্রবাদগুলিকে এক অর্থে নীতিকথা বা উপদেশও বলা যেতে পারে।
নিম্নে কিছুসংখ্যক প্রবাদ আলোচিত হলোঃ
* উলুবনে মুক্তা ছড়ানোঃ অস্থানে মূল্যবান দ্রব্য প্রদান। (৪২তম বিসিএস)
* সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙেঃ উভয়কুল রক্ষা। (১০ম বিসিএস)
* অধিক সন্ন্যাসীতে গাঁজন নষ্টঃ বেশি লোক হলে কাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। (১০ম বিসিএস)
* শুণহীনের ব্যর্থ আস্ফালনঃ অসারের তর্জন-গর্জন সার। (১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন ২০১৯)
* মাছি মারা কেরানিঃ বিচারবোধহীন নকলনবিশ। (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রেগ্রামার)
* গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেলঃ পাওয়ার আগে ভোগের আয়োজন। (উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ২০১৬)
* পর্বতের মূষিক প্রসবঃ বিপুল উদ্যোগে তুচ্ছ অর্জন। (সমাজসেবা অধিদপ্তরের সমাজসেবা অফিসার ২০১০)
একাধিক পদ বা উপবাক্যকে একটি শব্দে প্রকাশ করা হলে, তাকে বাক্য সংক্ষেপণ বলে। এটি বাক্য সংকোচন বা এক কথায় প্রকাশেরই নামান্তর।